October 2, 2025
ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন,বিএনপি জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত একটি দল। তাদের প্রতি জনগণের ভালোবাসা সবসময় আছে। তাই বিএনপিকে ফরমালিন দেয়ার দরকার নেই। আমাদের ফরমালিন দিয়ে কাজ হবে না।ফরমালিন দিয়ে বিএনপিকে তাজা রাখার দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৩তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী যুবদল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। মির্জা আব্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেন বিএনপিকে ফরমালিন দিয়ে তাজা রাখা হয়েছে। বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। এদের পচার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই ফরমালিন দিয়ে তাজা রাখারও দরকার নেই। কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে ধ্বংস করতে পারবে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের জন্য তার বিচার করা হতো। উনি যদি হত্যাকারীদের বিচারই চাইতেন তাহলে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে তার আশেপাশে থাকতে পারতো না। তারেক রহমান যেসব কথা বলছেন তার সব কিছুই তথ্যবহুল। তিনি বিভিন্ন বইপত্র ও পত্রিকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন বলেও এসময় দাবি করেন তিনি।তিনি বলেন, তারেক রহমানের সব বক্তব্য তথ্যবহুল। নিছক কল্পকাহিনী নয়। আমি চ্যালেঞ্জ করলাম পারলে মিথ্যা প্রমাণিত করুন।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন,দয়া করে দেশের ১২টা বাজাবেন না। এখনো সময় আছে নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে ভালোয় ভালোয় কেটে পড়ুন। নাহলে জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না। মির্জা আব্বাস আরো বলেন,জনগণের ভালবাসায় সিক্ত বিএনপি কখনো পঁচে নাই। মানলাম বিএনপি পঁচে গেছে। এই পঁচা দলের সঙ্গে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে জিততে পারেন কি না একবার নির্বাচন দিয়ে দেখুন। মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সবাই তারেক রহমানের সত্য কথা বলায় গালিগালাজ করেন। তার বক্তব্য কোনো গল্পকাহিনী নয়। তার কথা সত্য বলেই তাদের জ্বালা মেটানোর জন্য এসব গালিগালাজ করছেন।দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অকেজো স্লোগান দেবেন না। আন্দোলনের প্রস্তুতি জন্য জোরালো স্লোগান দেন। আন্দোলনে নামতে হবে। দখলদার সরকারকে পতন ঘটাতে হবে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শেখ হাসিনার আশেপাশের লোকজন লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালত সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করলে হত্যা, গুম, খুনের মতো ঘটনা ঘটানো সম্ভব হতো না। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর রায় বলেন, আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীর নামে যে মানবতাবিরোধী বিচার করছে তা প্রহসনের বিচার। তারা রাজনৈতিক কারণে এই লোকদেখানো বিচার করছে।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যাকে পান তাকে আপন করে নেন। এতে কিছু ভেজাল লোক ঢুকে পড়েছে।তাদের সরিয়ে খালেদা জিয়াকে কঠিন আন্দোলনের ডাক দেয়ার আহŸান জানান গয়েশ্বর। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সবাইকে জিয়াউর রহমানের আদর্শে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে এবং খালেদা জিয়ার ডাকে সবাইকে রাজপথে নেমে দখলদার সরকারকে পতন ঘটাতে হবে।বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, যে কথা আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সারির নেতাদের বলার কথা, এখন সে কথাগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন। আপার ( শেখ হাসিনা) পিতার প্রতি যদি ভালোবাসা, মমতা থাকতো তাহলে আপনার ডানে-বায়ে হত্যাকারীরা কি করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন?
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামসহ কয়েকজন এমপির নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, খন্দকার মোস্তাকের ঘনিষ্ঠ ও মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের এমপি, মন্ত্রী বানিয়ে এনেছেন শেখ হাসিনা।
সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, যে কথা তার দলের দ্বিতীয় সারির লোকদের বলার তা তিনি নিজে বলেন। তার এতো কী জ্বালা, তার ভাষণে ভাষণে জিয়াউর রহমানের পরিবারের কথা বলেন।শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, আপনার দলের ইতিহাস তাকিয়ে দেখেন, আপনার বাবার খুনিকে পেয়ে যাবেন। অযথা জিয়াউর রহমানকে দোষে লাভ হবে না।
তিনি বলেন, আপনার বাবার প্রতি দরদ থাকত খুনিদের বিচার করতেন। তাদের এমপি-মন্ত্রী বানাতেন না। তাদের শপথ পাঠ করাতেন না।জাতীয়াতাবাদী যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন- যুবদল সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক, যুবদল নির্বাহীকমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মামুদুর রহমান, যুবদল নির্বাহী কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলি আকবর হাওলাদার, যুবদল নির্বাহী কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক কাজী রফিক প্রমুখ।