October 15, 2024
এম সাখাওয়াত হোসেন : প্রথমে সুশীল সমাজ ও পরে দুই পর্বে দেশের প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন সংলাপ সম্পন্ন করেছে। এরপরেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মোটাদাগে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম দুই আলোচনায় যা দেখলাম সেই একই কায়দায় আলোচনা করলে এটি ফলপ্রসূ হবে বলে মনে হয় না। তবে অতীতেও বলেছি এখনো বলেছি উদ্যোগটি যথেষ্ট প্রশংসনীয়, এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করাও অত্যন্ত জরুরি। এসব আলোচনার একটি লক্ষ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো না হয়। আগামী নির্বাচন হতে হবে সব দলের অংশগ্রহণে এবং দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য। এ বিষয়ে এই দেশের আপামর জনসাধারণও একমত পোষণ করেন। এটাই নির্বাচন কমিশনের প্রয়াস এবং এ বিষয়ই নির্বাচন কমিশনের করণীয় নির্ধারণে সহযোগীদের সহযোগিতা অবশ্যই প্রয়োজন।
এ পর্যন্ত কয়েকটি আলোচনায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরাও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কীভাবে করা যায়, তা নিয়েই আলোচনা করতে গিয়ে কার্যত দুটি বিষয়ের মধ্যেই ঘুরপাক খেয়েছেন। বিষয় দুটি এর আগেও চর্চিত হয়েছে এবং এর ওপর সংক্ষিপ্তভাবে লিখেছিলামও। এর একটি নির্বাচনকালে সেনা নিয়োগ এবং অপরটি ‘না-ভোট’-এর বিধান রাখা। মনে হয় যেন এই দুটিই আগামী নির্বাচনের বিশুদ্ধতা ও গ্রহণযোগ্যতার একমাত্র অন্তরায়! তেমনটা মোটেও নয়। এগুলো আনুষঙ্গিক মাত্র। যাঁরা এই দুটি ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন, তাঁরা কোনো জোরালো বা যৌক্তিক কারণ তুলে ধরতে পেরেছেন বলে মনে হয় না।
যেমনটা আগেও বলেছি, সামরিক বাহিনীর সাহায্য এ পর্যন্ত সব জাতীয় নির্বাচনে প্রয়োজন হয়েছে। এ নির্বাচন সহযোগিতা ছাড়া অনুষ্ঠিত হবে বা হতে পারবে, তা মনে হয় না। এবং বিষয়টি সম্পূর্ণভাবেই নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভরশীল। এখানে প্রশ্ন থাকতে পারে যে ওই সময়ে সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন এবং তাদের কার্যক্রম রিটার্নিং অফিসার তথা নির্বাচন আইনের আওতায় হবে, নাকি সিআরপিসির আওতায় হবে? এখানে প্রয়োজন মতামতের। যদিও আমি এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়া অন্য কারও মতামত খুব জরুরি, তেমনটা মনে করি না।
এ সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে ভোটারদের নিরাপত্তা ও নির্বাচনের পরিবেশ আয়ত্তে রাখার জন্য। নির্বাচন কমিশন যদি শুধু অস্ত্রবিহীন আনসার-ভিডিপি দিয়েও অথবা কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত করাতে পারে, সেটাই হবে কাম্য। তবে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক ও নির্বাচনী সংস্কৃতির পরিবেশে তা শুধু সুখস্বপ্নই মাত্র। আদৌ এ স্বপ্ন বাংলাদেশে কোনো দিন বাস্তব হবে কি না জানি না, তবে ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অনেকের অনেক মত থাকলেও নির্বাচনের পরিবেশ এবং নিরাপত্তার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত সাদামাটা। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে তেমন থাকেনি।
আগামী নির্বাচনের পরিবেশ বা নির্বাচন কতখানি গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যথেষ্ট সন্দেহ রয়ে গেছে। কারণ, বিগত দিনগুলোতে সাধারণ মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি, যার দায়দায়িত্ব সব রাজনৈতিক দলের। তবে বর্তমান কমিশন সব সময়েই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারবে বলে তাদের আশাবাদ জানিয়ে আসছে। হালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, বর্তমান সংবিধানের আওতায় দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। অবশ্যই সম্ভব যদি সে পরিবেশ তৈরিতে সবার প্রচেষ্টা এবং সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় থাকে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তেমন লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
আমাদের দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অধিকাংশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের উদাহরণ রয়েছে। তাত্ত্বিকভাবে আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত আধুনিক তাত্ত্বিক কাঠামোর উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এ ব্যবস্থাপনায় একটি অত্যন্ত কার্যকর শক্তিশালী নির্বাচনী আইন রয়েছে। রয়েছে সহজে আইন প্রণয়ন ও সংস্কারের ব্যবস্থা, একটি স্বাধীন এবং আইন দ্বারা শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনী নিষ্পত্তি আইনের মাধ্যমে আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে এবং মনোনয়ন নির্ধারণে ব্যবস্থা নেওয়ার আইনি ক্ষমতা এবং নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আইনের বিধান ও আদালতে আবেদন করার এবং ত্বরিত মীমাংসার ব্যবস্থা।
তদুপরি রয়েছে নির্বাচন কমিশনের বিশাল বহরের মাঠপর্যায়ের এবং প্রয়োজনীয় সরবরাহের (লজিস্টিকস) ব্যবস্থাপনার দক্ষতা। এত কিছুর পরও প্রশ্ন থাকাটা স্বাভাবিক যে, তাহলে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কেন গ্রহণযোগ্য হবে না? তাত্ত্বিকভাবে হওয়ার কথা, তবে বাস্তবটা কি তেমন? এ প্রশ্নের উত্তরে অন্তর্নিহিত রয়েছে তাত্ত্বিক ব্যবহারিক বা বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে তফাত। আমাদের দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে দলীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুখকর হয়নি, এর উদাহরণ টানার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করি না। এমনকি স্থানীয় সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থাপনাতেও হিমশিম খেতে হয়েছে। দু-চারটি ভালো স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে সার্বিক বলে চালিয়ে দেওয়া যায় না। স্মরণ থাকার কথা যে ২০১৬ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো কেমন হয়েছিল, তা নিয়ে কথা বলারও তেমন কিছু নেই।
যেমনটা বলেছি তাত্ত্বিক দিক হতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সব কাঠামোই বিদ্যমান, তবু দলীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে এ পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে এত বিতর্কের কারণ প্রধানত তত্ত্বকে প্রয়োগে পরিণত করার মতো পরিবেশ তৈরি করা। বিদ্যমান পরিবেশে সম্ভব নয়। এ অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অন্তরায়;সেগুলো আমার গবেষণা ও বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে লব্ধ, উল্লেখ্য১. রাজনৈতিক সংস্কৃতি, যা সুবিধাভোগী (প্যাট্রন ক্লায়েন্ট) রাজনীতিতে পরিণত হয়েছে। দুটি সামরিক ও আধা সামরিক শাসনের সময় থেকে ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রয়েছে। ২. প্রশাসন–ব্যবস্থা ব্যাপক দলীয়করণ, যা ১৯৭৫-এর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত। ৩. নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ নিয়ে ধোঁয়াশা, বিশেষ করে স্থায়ী গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা না থাকায় দলীয় সরকারকর্তৃক নিয়োগ; ৪. নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তার ব্যবস্থাপনার সমস্যা।
এ পর্যায়ে আমি সংক্ষিপ্তভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় আমাদের মতো দেশে, যেখানে ভালো নির্বাচনের অন্তরায়গুলো দারুণভাবে নির্বাচনের মুখ্য নিয়ামক হয়ে দাঁড়ায়, তার অন্যতম নির্বাচনী নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করছি। আমাদের মতো দেশে যেকোনো নির্বাচনে প্রধান বিবেচ্য হিসেবে নিরাপত্তাই নির্বাচন কমিশনের প্রধান মাথাব্যথার কারণ এবং সবচেয়ে দুরূহ কাজ হিসেবে বিবেচিত।
একটি নির্বাচনে নিরাপত্তার পরিকল্পনা করতে হয় তিন ধাপে, ১. প্রাক্-নির্বাচন (ভোট গ্রহণ): ২. নির্বাচনের দিন এবং ৩. নির্বাচনের পর। এই তিন ধাপের প্রতিটিতে চার স্তরের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেবিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করতে হয়। বিভিন্ন বাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো এর প্রশিক্ষণ, বাহিনীর ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কাঠামোগত বৈশিষ্ট্য এবং আমাদের মতো দেশে জনগণের আস্থার বিষয়টি বিবেচনায় এনে স্তরগুলো বিন্যাস করতে হয়। এই স্তরগুলো হলো ১. কাঠামোগুলোর নিরাপত্তা: নির্বাচনী অফিস, রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস, ভোটকেন্দ্রসহ গণনাকেন্দ্র এবং অংশগ্রহণকারী দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় অফিসগুলো, ২. নির্বাচনে ব্যবহার্য দ্রব্যাদির নিরাপত্তা, ৩. তথ্যের নিরাপত্তা,ভোটার তালিকা, বিভিন্ন পরিসংখ্যান এবং নির্বাচনের ফলাফল এবং সংশ্লিষ্ট আইনানুগ তথ্যাদি এবং ৪. ভোটার, জনসাধারণ এবং নির্বাচনে নিয়োজিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা। চতুর্থ স্তরের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই স্তরের নিরাপত্তা নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি না হলে ভোটাররা, বিশেষ করে নারী ভোটার ও পক্ষান্তরে সংখ্যালঘু ভোটাররা, নির্বাচন থেকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিরত থাকেন।
ওপরে আলোচিত ধাপ এবং স্তর বিবেচনা না করে নিরাপত্তার পরিকল্পনা কার্যকর হয় না। একই সঙ্গে প্রতি ধাপ এবং স্তরের জন্য কী ধরনের কাঠামোগত বৈশিষ্ট্যের, প্রশিক্ষণ এবং নির্ভরযোগ্য বাহিনীর প্রয়োজন, সেটা বিবেচনা করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
পরিকল্পনাকালে আরও মনে রাখতে হবে বর্তমান পরিবেশে জঙ্গি হামলার বিষয়টিকেও। আমাদের দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তার বিষয়টি কত গুরুত্বপূর্ণ, তার সামান্য উদাহরণ নির্বাচনী বাজেটে নিরাপত্তার খরচ। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালে, শুধু নিরাপত্তা বাবদই খরচ হয়েছে ১৯৯ কোটি ৯২ লাখ ৯ হাজার ৬১ টাকা। নির্বাচনী বাজেটের ৭০ শতাংশ। স্মরণযোগ্য যে মাত্র ১৪৭টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অপরদিকে ২০০৮ সালের নির্বাচনী ব্যয় ছিল ৯৪ কোটি ৬৮ লাখ ৬০ হাজার ৫৩ টাকা। ১৯৯১ সালে খরচ হয়েছিল ২৮ কোটি ৫৩ লাখ ৭২ হাজার ১৭৩ টাকা। (সূত্র: নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী পরিসংখ্যান)।
ওপরের পরিসংখ্যান থেকেই প্রতীয়মান হয় যে আমাদের দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে বড় যজ্ঞ নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা। এত ব্যাপক আয়োজন ইঙ্গিত দেয় যে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতেনিরাপত্তার বিধানই নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ। এত বড় যজ্ঞের পরও সুষ্ঠু নির্বাচন করা দুষ্কর, যখন রাজনৈতিক সংস্কৃতি, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন থাকে এবং জনমনে বিশ্বাসযোগ্যতা, সংগত কারণে ঘাটতি থাকে। তবে আমার মতে, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সবচেয়ে বড় সহায়ক প্রশাসনের নিরপেক্ষতা। প্রশাসনের সংস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও অন্তর্ভুক্ত, বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের বিদ্যমান রাজনৈতিক বিভাজন এবং সংস্কৃতির কারণ নির্বাচন কমিশনের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতারও কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কাজেই ওপরের সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণের আঙ্গিকে আগামী নির্বাচনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা, যা এখন থেকেই শুরু করা উচিত। কী ধরনের বাহিনী কোন ধাপ এবং স্তরের জন্য প্রযোজ্য হবে, তা যেমন আইনি কাঠামো ও নিরাপত্তা পরিকল্পনায় রাখতে হবে, তেমনি রি-অ্যাকটিভ নয় প্রো-অ্যাকটিভ নিরাপত্তার পরিকল্পনায় সামরিক বাহিনী ব্যবহারের প্রশ্নটির উত্তর পাওয়া যাবে নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা ও সামর্থ্য থেকে। আমি মনে করি, ‘প্রো-অ্যাকটিভ’ নিরাপত্তার জন্য সামরিক বাহিনীকে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে রাখতে নির্বাচনী আইনি কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করাই শ্রেয়। কাঠামোতে রাখা মানেই এই নয় যে সামরিক বাহিনী অথবা আইনে উল্লেখিত সব বাহিনীকেই নিয়োগ দিতেই হবে। কোন কোন বাহিনী কোন কোন স্তরের জন্য প্রয়োজন, সে নির্ণয় নির্বাচন কমিশনের। কাজেই এ বিষয় নিয়ে বিতর্ক অবান্তর।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ একটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা। এ কাজ করতেনির্বাচন কমিশনকে যা যা করার প্রয়োজন, তেমন ক্ষমতাই সংবিধানের ১১৯ ধারার মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। বাস্তবতার নিরিখেই নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় যে পরিবর্তন ও পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন, তা নির্বাচন কমিশনকে এখন থেকেই গ্রহণ করতে হবে।
এম সাখাওয়াত হোসেন: সাবেক নির্বাচন কমিশনার, কলাম লেখক ও পিএইচডি গবেষক।
নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তারা বিশেষ করে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দুর্নীতি না করলে অথবা দুর্নীতিকে প্রশয় না দিলে মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি হতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের মর্যাদা তখনই সমুন্নত থাকবে, যদি কমিশনের কর্মকর্তারা দুর্নীতিমুক্ত থাকেন। তবেই এই প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতিফলন ঘটবে। ‘
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দুদক প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় সংস্থার চেয়ারম্যান সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট শুধু শোকের দিন নয়, এটি বাঙালি জাতি জন্য লজ্জারও দিন। কারণ যে মহান ব্যক্তি দেশের স্বাধীনতা তথা মানুষের মুক্তির জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন, এমনকি বাঙালি জাতির জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন, তাঁকে কতিপয় বাঙালিই হত্যা করেছে। এই হত্যাকান্ড বাঙালি জাতির জন্য কলঙ্কের। ‘
ইকবাল মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে জাতিকে রক্ষার ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় দুদকেরও দায়িত্ব রয়েছে। কোন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা হয় অবৈধ উপার্জিত অর্থ দিয়ে। এ কারণে অবৈধ অর্থ বা অবৈধ সম্পদ ধরার আইনি দায়িত্ব দুর্নীতি দমন কমিশনের।
তিনি দুদক কর্মকতাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করে সকল দুর্নীবাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আজ থেকে আমাদের শপথ হোক কোন দুর্নীতিবাজ কিংবা তদবীরবাজের চাপের কাছে মাথা নত করবো না।
কোন অবস্থাতেই দুর্নীতিবাজদের ছাড় দেব না। আইন অনুযায়ী সততা, নিষ্ঠা ও নির্ভীকচিত্তে দায়িত্ব পালন করবো। তাহলেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে।
কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ, এএফএম আমিনুল ইসলাম ও মহাপরিচালক ড. মো. শামসুল আরেফিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দুর্নীতির অভিযোগের মুখে বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেছেন শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবি করুণানায়েক।
অবশ্য তিনি দাবি করেছেন, কোনো দুর্নীতি তিনি করেননি।
পদত্যাগ করে রবি করুণানায়েক পার্লামেন্টকে বলেন, ‘আমি কখনো কোনো ভুল করিনি। শ্রীলঙ্কায় নতুন রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি ও সুশাসন নিশ্চিত করতে সম্মানের সঙ্গে পদত্যাগ করছি।’
যদিও মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও দল ছাড়ছেন না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন তিনি পার্লামেন্টের পেছনের সারির একজন সদস্য হিসেবে কাজ করে যাবেন।
রবি করুণানায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর বিলাসবহুল একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনার অর্থ দিয়েছেন একজন ব্যবসায়ী, যার বিনিময়ে কিছু সুবিধা দেওয়া হয় ওই ব্যবসায়ীকে। সে সময় করুণানায়েক অর্থমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু করুণানায়েকের দাবি, অ্যাপার্টমেন্ট কেনার বিষয়গুলো তাঁর পরিবার দেখভাল করেছে। তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না।
অভিযোগ অস্বীকার করে করুণানায়েক পার্লামেন্টে বলেন, সরকারকে অস্থিতিশীল করতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। মন্ত্রিসভায় দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্যই তিনি পদত্যাগ করছেন। এ ছাড়া তাঁর দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরকার যাতে কোনো ঝামেলায় না পড়ে, সেটাও একটা কারণ।
জাল দলিল তৈরি করে জমি দখলের অভিযোগে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
বুধবার দুদকের উপ পরিচালক জুলফিকার আলী বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলটি করেন।
দুদক সচিব আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জমির দখল নিয়ে জাল দলিল সৃষ্টি এবং প্রতারণার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে।”
রাজধানীর ধানমণ্ডির ২ নম্বর সড়কের এক বিঘা জমি নিয়ে জাতীয় পার্টির নেতার বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছে। ১৯৭৯ সাল থেকে জমিটি ফিরোজের ভোগদখলে।
নিজেদের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে মামলায় বলা হয়েছে, এই জমির মালিক ছিলেন কানাডার সাবেক হাইকমিশনার মোহাম্মদ আলী। তিনি ১৯৭০ সালে তার দ্বিতীয় স্ত্রী বেগম আলীয়া মোহাম্মদ আলী, ছেলে সৈয়দ মাহমুদ আলী ও মেয়ে সৈয়দা মাহমুদ আলীকে বাড়িসহ ওই জমি উইল করে দিয়ে যান এবং ওই বছর মে মাসে তাদের যৌথ নামে নামজারি হয়।
“কিন্তু কয়েক বছর পর ফিরোজ রশীদ ওই জমি অবৈধভাবে দখল করেন এবং ১৯৭৯ সালের অগাস্টে রেজিস্ট্রি করা দলিলে ভুয়া দাতা বেগম আলীয়া মোহাম্মদ আলী ও সাক্ষী কাজী আরিফুর রহমানকে সাজিয়ে ও ওই সময়ের ঢাকার জেলা রেজিস্ট্রার এম আহমেদের সহযোগিতায় জাল দলিল তৈরি করে ভোগ দখল করে আসছেন।”
বিস্তারিত জানতে চাইলে দুদক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, “আপাতত মামলা হল। এখন তদন্তে সবকিছু জানা যাবে।”
এই বিষয়ে ফিরোজ রশীদের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা: ক্ষমতা কমে যাওয়াতে আপত্তি নেই দুর্নীতি দমন কমিশনের। ‘দুর্নীতি ও ঘুষ কেলেঙ্কারি’ অপরাধ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের তফসিল থেকে অন্য অপরাধগুলোকে বাদ দেওয়ার সরকারি উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসাবে মনে করছে কমিশন। সোমবার ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৫’ ও ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ (সংশোধন) আইন, ২০১৫’ সংশোধনের প্রস্তাব চূড়ান্তভাবে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর এক প্রতিক্রিয়ায় কমিশনের চেয়ারম্যান একথা বলেছেন।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী দুর্নীতি ও ঘুষ কেলেঙ্কারির অপরাধসমূহের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশন মুদ্রা পাচার, জালিয়াতি, প্রতারণা, মাদক সংক্রান্ত অপরাধসহ বেশ কিছু অপরাধের তদন্ত ও মামলা পরিচালনা করে আসছে। আজকের সংশোধনীর খসড়ায় দুর্নীতি ও ঘুষ কেলেঙ্কারি ছাড়া অন্যান্য অপরাধসমূহ কমিশনের তফসিল থেকে বাদ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘কিছু অপরাধের তদন্ত ও মামলা পরিচালনার দায়িত্ব অন্যান্য সংস্থাকে দেওয়া হলে দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর চাপ অনেক কমে আসবে।’ এতে কমিশন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের মধ্যে কোনও ধরনের ব্যত্যয় সৃষ্টি হবে না বলেও জানান তিনি।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের সংশোধনের বিষয়ে বদিউজ্জামান বলেন, ‘আইনটি সংশোধনের বিষয়ে আমাদের সায় আছে। আমরাই চেয়েছি যাতে আইনটি সংশোধন করে বেসরকারি পর্যায়ের ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রতারণা, জালিয়াতি ও ভূমি দখল-বেদখলসহ এ ধরনের মামলাগুলো কমিশনের বাইরে অন্যান্য সংস্থাকে দেওয়া হয়। কেননা- এ ধরনের হাজার হাজার অভিযোগ এখন কমিশনের পেন্ডিং রয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুসন্ধান করতে গিয়ে কমিশনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কাজেই আমরাও চেয়েছি- বিদ্যমান আইনটি সংশোধন করা হোক। এতে কমিশনের ওপর অনেক চাপ কমে আসবে।’
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশোধনীর প্রস্তাব সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই আইনটি সংশোধনের বিষয়ে অফিসিয়ালি আমি এখনও তেমন কিছু জানি না। তবে এই আইনটি সংশোধনের উদ্দেশ্য নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমাদের কমিশনের প্রতিনিধিও অংশ নিয়েছেন। মানিলন্ডারিং অপরাধের তদন্ত পুলিশ করতে চায় বলে ওই সময় আমাদের একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। এতে আমরা কোনও দ্বিমত করিনি।’
আইন সংশোধনের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে বদিউজ্জামান বলেন, ‘এটা আমি মনে করি না যে কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করার উদ্দেশ্যে আইন সংশোধন করা হচ্ছে। কেননা- আইন সংশোধন করে কিছু মামলা অন্যান্য সংস্থার কাছে হস্তান্তর করার প্রস্তাব আমাদেরই ছিল। তাছাড়া কমিশন প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্যই ছিল- দুর্নীতি দমন। দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা দায়েরের এখতিয়ার কমিশনের হাতেই থাকছে।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘তদন্ত ও মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা আগেও পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়েছি। অনেক মামলার ক্ষেত্রে আমরা আগেও যৌথভাবে তদন্ত ও অনুসন্ধান চালিয়েছি। এসব অপরাধের তদন্তভার এখন পুলিশের হাতে দিলে আমাদের ওপর চাপ অনেক কমে আসবে।’
মামুন খান : দুদকের দায়ের করা প্রায় ৩শ কোটি টাকা মূল্যের গুলশানের একটি বাড়ি দুর্র্নীতির মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও ভাই মনজুর আহমদের চার্জশুনানির জন্য আগামি ৩০ এপ্রিল দিন ধার্য করেছে আদালত।
নিরাপত্তাজনিত কারণে আদালতে উপস্থিত হতে না পারায় মওদুদ আহমেদের পক্ষে সময়ের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে ওই দিন ঠিক করেন।
২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর গুলশান থানায় দায়ের করা এ মামলায় গত বছর ২৫ মে আদালতে মওদুদ আহমেদ ও মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৯৬০ সালের ২৪ আগস্টে গুলশান আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এক বিঘা ১৩ কাঠা আয়তনের (হোল্ডিং নং ১৫৯) প্লটটি পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসানকে হস্তান্তর করে তৎকালীন ডিআইটি (বর্তমানে রাজউক)। পরে তার স্ত্রী ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজের নামে রেজিস্ট্রি হয়। ফ্ল্যাজও যুদ্ধের পরপর দেশ ত্যাগ করায় সম্পক্তিটি পরিত্যক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু মওদুদ আহমদ উক্ত সম্পত্তি আত্মসাতের অসৎ উদ্দেশ্যে নিজেকে ফ্ল্যাজের আম মোক্তার দেখিয়ে দখলে নেন এবং নিজেকে ভাড়াটিয়া হিসেবে দেখান। এরপর ১৯৭৯ সালের তিনি সরকারের আসার পর সম্পত্তিটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ফের ফ্ল্যাজের নামে ১০০ টাকা মূল্যের রেজিস্ট্রি দেখান। ১৯৮৫ সালে ৩০ মে ফ্ল্যাজ মারা গেলেও মহাসিন নামে এক ব্যক্তিকে ফ্ল্যাজের আম- মোক্তার দেখিয়ে মওদুদ আহমেদ তার ভাই মনজুর আহমেদের নামে সম্পত্তি বিক্রয় চুক্তি তৈরি করেন।
নিউজ ডেস্ক: পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে গঠন করা হয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল মার্কেট ফোরাম। ফোরামটি পুঁজিবাজারসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করবে। সোমবার দুপুরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বোর্ড রুমে বাজার সংশ্লিষ্ট ছয়টি সংগঠন এক সমন্বয় সভায় বসে এ সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন। প্রথমিক অবস্থায় ফোরামের সদস্য ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। সভা শেষে ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক আহসানুল ইসলাম টিটু জানান, এই ফোরাম প্রাথমিকভাবে পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করবে। পরবর্তীতে দেশের অন্যান্য খাত নিয়েও কাজ করবে। সভায় ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক আহসানুল ইসলাম টিটু , বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের সভাপতি আলী রেজা ইফতেখার, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আসাদ খান ও অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সভাপতি মো. ফায়েকুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার ৩ ডিসেম্বর লেনদেন ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।একই সঙ্গে বেড়েছে মূল্যসূচকও। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক ও লেনদেন উভয়ই বেড়েছে।
ডিএসইর ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, এদিন ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সূচক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৯৯২ পয়েন্টে অবস্থান করে। এছাড়া ডিএস-৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৫৩ পয়েন্টে এবং ডিএসইএস সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১৬৬ পয়েন্টে স্থির হয়।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩৫টির, কমেছে ৪৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির দাম।
টাকার অংকে লেনদেনের শীর্ষ কোম্পানির মধ্যে ওঠানামা করে- কেয়া কসমেটিকস, ফার্মা এইডস, বেক্সিমকো ফার্মা, ডেল্টা লাইফ, গ্রামীণফোন, এবি ব্যাংক, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, অগ্নি সিস্টেমস, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও লাফার্জ সুরমা।
লেনদেন হয়েছে মোট ৫১৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, এদিন সিএসইর সিএসসিএক্স সূচক ১১৭ পয়েন্ট বেড়ে ৯ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। এছাড়া সিএসই-৩০ সূচক ১৮৪ পয়েন্ট বেড়ে ১২ হাজার ৫৯৭ পয়েন্টে এবং সিএএসপিআই সূচক ১৯৫ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
স্টক এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২২৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ৪৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির দাম।
লেনদেন হয় মোট ৩৫ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
ঢাকা: দেশের দুই পুঁজিবাজারে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে। তবে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারে লেনদেন শুরুর সময় সূচক বাড়তে থাকে। কিন্তু দিন শেষে সেই ধারা বজায় থাকেনি।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ২০ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৬৩ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া ডিএস ৩০ সূচক আগের দিনের চেয়ে ৭ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৫২ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে এবং ডিএসইএস শরীয়াহ সূচক আগের দিনের চেয়ে ৭ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬৬ দশমিক ৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
রোববার ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৫৩ কোটি টাকা। যা আগের দিনের চেয়ে ৫৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বেশি। এ দিন মোট ৩০৩টি কোম্পানির শেয়ার লেণদেন হয়েছে। এরমধ্যে বেড়েছে ১১৩টির, কমেছে ১৫৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টি কোম্পানির শেয়ার দর।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক আগের দিনের চেয়ে ১০ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ৩৬০ দশমিক ২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪২ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ৩৩৬ দশমিক ১৮ পয়েন্টে, সিএসআই শরীয়াহ সূচক ৬ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪১ দশমিক ২৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে সিএসই ৫০ সূচক আগের দিনের চেয়ে শূন্য দশমিক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১১১ দশমিক ৬৫ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৪ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে ১২ হাজার ৫১০ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৫১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এদিন মোট ২১৮টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে বেড়েছে ৭৫টির, কমেছে ১২৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৫টি কোম্পানির শেয়ার দর।