April 25, 2024
নতুনমুখ মানেই নতুন কিছু দেখা। পুরাতন নায়ক-নায়িকাদের পাশাপাশি বেশকিছু নতুন মুখ এরইমধ্যে নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলচ্চিত্রের আঙ্গিনায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। চলচ্চিত্রে নবাগত অভিনেতা-অভিনেত্রীর মধ্যে এরইমধ্যে বাপ্পী, সায়মন, মাহী নিজেদের একটা শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন।
আসছে ২৮ ফেব্রুয়ারি বড়পর্দায় আরেক নতুন জুটির অভিষেক হতে যাচ্ছে। তাদের নাম ফাহিম চৌধুরী ও হুমায়রা নওশিন রথী। তারা দু’জনে দুই বাংলার ছবি ‘সীমারেখা’-তে অভিনয় করেছেন। দেওয়ান নাজমুল পরিচালিত এ ছবিটি গত বছরের ৪ ডিসেম্বর বিনা কর্তনে ছাড়পত্র পায়। দুই বাংলার জন্য নির্মিত এ ছবিটির আরেক পরিচালক হলেন কলকাতার স্বপন সাহা। ছবিটিতে একজোড়া নতুন মুখ উপহার দিয়েছেন পরিচালকদ্বয়। তবে এ জুটির পরিচয় অনেক আগে থেকেই। গল্পের শুরুতেই তাদের দুজনের পরিচয়ের কাহিনী জানতে চাইলাম।
রথী বলা শুরু করলেন। ‘আমার সাথে ফাহিম ভাইয়ের পরিচয় ২০০২ সালে। আমরা এনটিভিতে তখন শাপলা কুড়ি নামে একটি নাচের অনুষ্ঠানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলাম। এরপর আমরা নাচের ক্লাসে জুটি হয়। ২০০৮ সালে একত্রে সোহাগ ভাইয়ের কাছে নাচ শেখা শুরু করি। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একসাথে নাচ করতাম।’ রথীর কথা শেষ না করতেই মুখ থেকে কথা কেড়ে নিলেন ফাহিম। বললেন, ‘আমরা একসাথে বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে অনেক নাচ করেছি। আর ২০১২ সালে আমরা আমাদের এ ছবির পরিচালকের চোখে পড়ি। তিনি একটি অনুষ্ঠানে আমাদের নাচ দেখে প্রশংসা করেন এবং তার এ ছবিতে প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন।’
একটু বলে রাখি। রথী এনটিভির ২০০৯ সালের মার্কস অলরাউন্ডার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপর নাচের পাশাপাশি বেশকিছু বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন। পাশাপাশি বর্তমানে বাংলাভিশনে ‘সিনেবিট সাদাকালো’, এনটিভিতে ‘মিউজিক ইউফোনি’ ও আরটিভিতে ‘বসুধা সিনেমার গান’ অনুষ্ঠানগুলো নিয়মিত উপস্থাপনা করেন।
অন্যদিকে ফাহিম চৌধুরীর গল্পটা একটু ভিন্ন। ফাহিম বললেন, ‘আমি নাচের প্রতি আগ্রহী ছিলাম। ২০০৫ সালে নাচ শেখার জন্য মনিরুল ইসলাম মুকুলের বাসা মানিকগঞ্জে যাই। সেখান থেকে নাচ শেখার পর ঢাকায় এসে বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং শেষে রথীর সাথে পরিচয়। এরপর তো সীমারেখায় সুযোগ। এ ছবিতে আমাকে একজন মুসলিম ছেলে এবং রথীকে হিন্দু মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে। মূলত সামাজিক অবস্থান ও দুই ধর্মের ছেলে মেয়ের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক নিয়ে এ ছবির গল্প। আমার জন্য এ ছবিটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
ছবির অন্য অভিনয়শিল্পীরা হলেন বাংলাদেশের ববিতা, সিরাজুল ইসলাম, অমল বোস, কাবিলা এবং ভারতের রজতাভ দত্ত, দুলাল লাহিড়ি, দীপংকর দে, মৃণাল মুখার্জি প্রমুখ। ছবির কাহিনী, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও গীত রচনা করেছেন পরিচালক নিজেই। ছবির বিভিন্ন গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর, কনকচাঁপা, বেবী নাজনীন, আগুন, এস আই টুটুল ও সামিনা চৌধুরী।
কলকাতা, শিলিগুড়ি এবং দার্জিলিংসহ ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন মনোরম লোকেশনে ছবিটির শুটিং হয়েছে। ‘সীমারেখা’ ছবি নিয়ে রথী আরো বলেন, ‘এ ছবিতে আমি একজন হিন্দু মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। গল্পে দেখা যাবে আমার দাদার বাড়ি কলকাতায়, সেখানেই আমি বড় হয়ে উঠেছি। এক সময় নানার বাড়ি ঢাকায় বেড়াতে এসে পরিচয় হয় ফাহিমের সঙ্গে। এ ছবিতে আমার বাবার চরিত্র করেছেন রজতাভ দত্ত। তার সাথে অভিনয় করতে পেরে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আর আমার ও ফাহিমের অভিনয় সবার পছন্দ হবে বলে আশা করছি।’
রথী বর্তমানে মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এইচএসসি-তে এবং ফাহিম একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ-তে পড়ছেন। ফাহিম ও রথী দুজন ভালো বন্ধুও বটে। একে অপরের সাথে নিজেদের কাজ নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনাও করেন। এজন্য পরিচালকরা হয়তো তাদেরকে একসাথে আরো বেশকিছু ছবিতে দেখতে চান।
তারা জানান, সামনে তাদের দুজনের ‘মনপাখি’ নামে নতুন একটি ছবিতে দেখা যাবে। এরইমধ্যে এ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তারা। ছবিটি পরিচালনা করবেন হাসান কামরুল। বড় পর্দায় নতুন এই জুটির যাত্রা শুভ হোক। শুভ হোক তাদের পথচলা। এটাই আমাদের চাওয়া।