পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ পুরো ফেরত পাওয়া যাবে

Posted on August 24, 2017 | in ব্যবসা-অর্থনীতি | by

ডেস্ক রিপোর্ট : ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন অর্থমন্ত্রী-

বিলম্ব হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থের পুরোটাই ফেরত পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি এগিয়ে নেয়া হচ্ছে বিধায় এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আপাতত প্রকাশ করবে না সরকার। বন্যা ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে যেসব অঞ্চলে রাস্তাঘাট খারাপ হয়ে গেছে তা মেরামতে প্রয়োজনে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া হবে। এছাড়া সঙ্কট মেটাতে দেড় লাখ টন চাল ও গম আমদানি করার অনুমতি দিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে ১ লাখ মেট্রিক টন গম এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি চাল।

বুধবার সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই সময় তিনি আরও বলেন, রিজার্ভ চুরির সব টাকা যাতে ফেরত পাওয়া যায় সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে টাকার একটি অংশ ফেরত এসেছে, এখন পুরো টাকা ফেরত আনার কার্যক্রম চলছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রাখা বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। তবে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে মার্চের শুরুতে। পরে ১৫ মার্চ এ ঘটনায় রাজধানীর মতিঝিল থানায় মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) যাওয়া টাকার একটি বড় অংশ পরে ফিলিপিন্সের একটি জুয়ার টেবিলে চলে যায়।

এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার। শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশিরভাগটাই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।

চুরি হয়ে ফিলিপিন্সে চলে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি ডলার ইতোমধ্যে ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাকি প্রায় সাড়ে ৬ কোটি ডলার ফেরতের বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে গবর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন ড. আতিউর রহমান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল। গত বছরের মার্চ মাসে সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, যার প্রধান করা হয় সাবেক গবর্নর ফরাসউদ্দিনকে।

এদিকে, গত ডিসেম্বর মাসে রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ দ্রুত উদ্ধারে সহায়তার জন্য হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে চুরির সবচেয়ে বড় এই ঘটনায় বাংলাদেশের তদন্ত প্রতিবেদন চায় ফিলিপিন্স সরকার। তবে রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়ার অনুরোধ নাকচ করে দিয়ে অর্থমন্ত্রী ওই সময় জানিয়েছিলেন, ফিলিপিন্স কর্তৃপক্ষকে এটি দেয়া হবে না। রিজার্ভ চুরির পর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই এ প্রতিবেদন তাদের দেয়া হবে না। এটি অন্যদের দিতে সরকার বাধ্য নয়। এটা কাউকেই দেয়া হবে না। বরং চুরির টাকা উদ্ধারে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ (এপিজি) বাংলাদেশের পক্ষে আইনী লড়াই করবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে কয়েক দফা উদ্যোগ নিলেও দেশটির পক্ষ থেকে কোন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

দেড় লাখ টন চাল গম আমদানি

আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে দেড় লাখ টন চাল ও গম কিনতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে ১ লাখ মেট্রিক টন গম এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি চাল। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্যাকেজ-২ এর আওতায় পৃথক তিনটি প্রস্তাবনায় এ চাল-গম আমদানি করা হবে। সচিবালয়ে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত পৃথক ৩টি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রতি মেট্রিক টন ২৫১ মার্কিন ডলার হিসেবে এতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১০৪ কোটি টাকা। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির পৃথক আরেকটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৪১১ দশমিক ১১ মার্কিন ডলার হিসেবে এতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১৭০ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার টাকা। এটি সরবরাহের কাজ পেয়েছে দুবাইয়ের একটি কোম্পানি। এছাড়া বৈঠকে আরও ১৮টি প্রস্তাবনা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তিনটি পৃথক কোটেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে ৯০ হাজার টন এমপিও সার আমদানির তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি ৩০ হাজার টন সার আমদানিতে সরকারের ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ১২ লাখ ৫১ হাজার টাকা

ভারত থেকে আনা হবে ২২ হাজার টন ডিজেল

ভারতের শিলিগুড়ি থেকে ২২ হাজার টন ডিজেল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইন্দোবাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেডের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে পার্বতীপুর ডিপোতে রেলপথে ট্যাংক ওয়াগনের মাধ্যমে ৫০০ পিপিএম মানমাত্রার এ ডিজেল আমদানি করা হবে। এতে সরকারের ব্যয় হবে ৮৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এসওপি অনুযায়ী এনআরএল থেকে ৫০০ পিপিএম মানমাত্রার ২২০০০ টন ডিজেল আমদানির ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম ৫ দশমিক ৫ ডলার করার সুপারিশ করেছে বিপিসি।

এর আগে ২০১৬ সালে বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ রেলপথে ট্যাংক ওয়াগনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২২৬৮ টন ডিজেল আমদানি করা হয়।

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud