পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

যারা ফেল করেছে তাদের উৎসাহ দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

Posted on July 23, 2017 | in জাতীয়, শিক্ষা ও সংস্কৃতি | by

ডেস্ক রিপোর্ট : এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় যারা পাস করেছে তাদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা ফেল করেছে তাদেরকে পড়ালেখার প্রতি উৎসাহ দিতে হবে। তাদের পড়ালেখার প্রতি আরও মনোনিবেশ করতে হবে, তাদের আরও ভালো করতে হবে।’

রবিবার (২৩ জুলাই) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এইচএসসি পরীক্ষার ফল হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। পরে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন। আজ দুপুর ২টার পর শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইট, নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও টেলিটক মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে পারবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে আমরা শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছিলাম। নিরক্ষরমুক্ত দেশ গড়তে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। আজকে আমাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। তবে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ কম। কিন্তু এ শিক্ষার প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে কম্পিউটার স্বপ্নের মতো ছিল। অনেকে চিনতোই না। আমরাই প্রথম কম্পিউটারের ওপর থেকে ট্যাক্স তুলে নিয়েছিলাম। এছাড়া বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারের জন্য ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় করেছিলাম। আমাদের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, আমি প্রথম করেছি। দেশে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, আমি আরও চারটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করেছিলামা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ছেলেমেয়েদের কাছে চাই- তারা পড়াশুনা করুক। তাদের শিক্ষার জন্য আমি বৃত্তি দিচ্ছি। ট্রাস্ট ফান্ড করেছি যাতে উচ্চ শিক্ষা নিতে পারে। আমরা কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ সবাই একই ধারার শিক্ষা নেবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন পরীক্ষার রেজাল্ট হলে পত্রপত্রিকা নানা কথা লেখে। তারা ভুলে যান আমরা ক্ষমতায় আসার আগে কতজন পাস করতো, আর এখন কতজন পাস করে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বহুমুখী শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছি। কারিগারি শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে টেক্সটাইল ও ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। সারাদেশে ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছি ৫ হাজার ২৭৫টি। এছাড়া লার্নিং অ্যান্ড আর্নিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে গ্রামের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি আয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ১০টি ভাষার অ্যাপস তৈরি করে দিয়েছি, যাতে বিভিন্ন ভাষা শিখে তারা বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরাই প্রথম ৬০ দিনের মধ্যেই রেজাল্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আগে পরীক্ষার সময় ও ফল প্রকাশের সময়ের কোনও ঠিক ছিল না। আমরা নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে এনেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ভর্তির ফরম সংগ্রহ, চাকরির জন্য তথ্য বাতায়ন করে দিয়েছি। এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায়। ফলে ছোটছুটি করে সময় নষ্টের প্রয়োজন হয় না। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করে দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কত শতাংশ পাস বা ফেল করলো তা বিবেচ্য বিষয় না। শিক্ষার্থীদের আরও পড়তে হবে, পড়াশুনার প্রতি মন দিতে হবে। প্রতিদিন পড়ার জন্য কোন সময় ভালো সেটা বেছে নিতে হবে। অভিভাবকদের সঠিক গাইডলাইন দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। নিজের ছেলেমেয়েদের প্রতি আন্তরিক হতে হবে, যেকোনও কথা যেন বলতে পারে তেমন পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যাতে জঙ্গি পথে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তারা কোথায় যায়, ক্লাসে অনুপস্থিত থাকছে কিনা সেটা দেখতে হবে। তাহলে তারা জঙ্গি পথে যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ দেশের দায়িত্ব এ ছেলেমেয়েদের নিতে হবে। ভালো বিজ্ঞানী, শিক্ষক হতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই এখনকার ছেলেমেয়েদের নেতৃত্ব দিতে হবে। অনেক রক্ত দিয়ে দেশটা স্বাধীন করেছি। বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদামপূর্ণ স্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়। প্রতিটি মানুষ যে মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে। স্বাধীনতার পর সামরিক শাসকরা দেশকে ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল। কয়েক বছর রিফুজি হিসেবে বিদেশে বাস করেছি। তখন বাংলাদেশের নাম শুনলে সবাই তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো।’
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষায় সঠিক মূল্যায়ন হওয়ায় এ বছর পাসের হার কম। সৃজনশীল উত্তরপত্র অতিমূল্যায়ন ও অবমূল্যায়ন নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে সরকার।

উল্লেখ্য, সারাদেশের পরীক্ষার্থী ছিল ১১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৭০ জন, পাস করেছে ৮ লাখ এক হাজার ৭১১ জন।

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud