পৃথিবীকে জেনে নিন আপনার ভাষায়….24 Hrs Online Newspaper

মোবাইল ফোনের কল রেট পরিবর্তনের উদ্যোগ

Posted on August 7, 2017 | in তথ্যপ্রযুক্তি | by

ডেস্ক রিপোর্ট : মোবাইল ফোনে কথা বলার খরচ পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এখন একই মোবাইল ফোন অপারেটরের নিজেদের গ্রাহকদের (অন-নেট) সঙ্গে কথা বলার সর্বনিম্ন খরচ ২৫ পয়সা, সেটি এখন বৃদ্ধি পেয়ে ৩৫ পয়সা হতে পারে। আবার অন্য অপারেটরে (অফ-নেট) ফোন করার খরচ ৬০ পয়সা থেকে কমিয়ে ৪৫ পয়সা নির্ধারণ করতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

একই সঙ্গে মোবাইল ফোনে কল করার সর্বোচ্চ মূল্য ২ টাকা থেকে কমিয়ে দেড় টাকা করার প্রস্তাব করেছে বিটিআরসি। বিটিআরসির প্রস্তাব অনুযায়ী, অন-নেট কলের ক্ষেত্রে অর্থাৎ গ্রাহক নিজস্ব নেটওয়ার্কে কল করলে তার পুরোটাই যাবে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের কাছে। আর অফ-নেট কলের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী যে অপারেটরের নেটওয়ার্কে কল যাবে, তারা প্রতি মিনিটের জন্য ১৮ পয়সা করে পাবে। এ ছাড়া যে অপারেটরের নেটওয়ার্ক থেকে কল তৈরি হয়, তাদের থেকে ইন্টার কানেকশন এক্সচেঞ্জও (আইসিএক্স) আগের মতোই ৪ পয়সা করে পাবে। অর্থাৎ অফ-নেট কলের ক্ষেত্রে মূল অপারেটরের ব্যয় হবে ২২ পয়সা। সম্প্রতি বিটিআরসির কমিশন বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অনুমোদনের পর এটি যাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ে।

কারণ, এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে সরকারের আয়-ব্যয়ের হিসাব জড়িত আছে। কলরেট পুনর্নির্ধারণের ফলে টেলিযোগাযোগ খাতের সামগ্রিক আয় বাড়বে বলে বিটিআরসি মনে করে। তবে খাতসংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে নেতিবাচক মনোভাব পেলে এসব সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ আছে বলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোনে কল করার সর্বনিম্ন সীমা ২৫ পয়সা, আর সর্বোচ্চ সীমা ২ টাকা। অর্থাৎ এ সীমার মধ্যে থেকে অপারেটররা বিভিন্ন প্যাকেজে কল করার মূল্য নির্ধারণ করে। বিটিআরসির নতুন প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে কলরেটের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ সীমা হবে যথাক্রমে ৩৫ পয়সা ও ১ টাকা ৫০ পয়সা।

জানা গেছে, কলরেট পরিবর্তনের নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ছোট অপারেটর থেকে বড় অপারেটরে কল করার খরচ কমবে। যেমন টেলিটক থেকে গ্রামীণফোনে কল করতে এখন ন্যূনতম খরচ ৬০ পয়সা। সেটি এখন কমে ৪৫ পয়সা হবে। এতে গ্রাহকসংখ্যায় পিছিয়ে থাকা অপারেটররা তুলনামূলক বেশি সুবিধা পাবে। যদিও অফ-নেট কল থেকে ছোট অপারেটরদের আয় কমে যাবে। কারণ, এ ধরনের কলের জন্য ২২ পয়সা খরচ বাদ দিয়ে বাকি ৩৮ পয়সা এখন তারা পায়। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে সে আয় কমে ২৩ পয়সা হবে।

বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে টেলিটকের গ্রাহকসংখ্যা ৩৭ লাখ, যা কার্যক্রম থাকা অপারেটরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সবচেয়ে বেশি ৫ কোটি ৯৩ লাখ গ্রাহক আছে গ্রামীণফোনের। এ ছাড়া এয়ারটেলের সঙ্গে একীভূত হওয়া রবির ৩ কোটি ৫০ লাখ আর বাংলালিংকের ৩ কোটি ১৩ লাখ গ্রাহক আছে। জানতে চাইলে মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবীর বলেন, কলরেট বৃদ্ধির যে প্রস্তাব বিটিআরসি দিয়েছে, সেটির সঙ্গে অ্যামটব একমত। কারণ, বাংলাদেশে ভয়েস কলের রেট বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন। সেটি যদি একটু সহনীয়ভাবে পুনর্নির্ধারণ করা হয়, সেটা সব পক্ষের জন্যই ভালো হবে। আর কলরেট বাড়লে তার বড় একটি অংশ পাবে সরকারই।

তবে সর্বনিম্ন কলরেট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, সর্বনিম্ন রেট বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি ঠিক রেখে বা কমিয়ে অন্য রেট কমালে কোনো আপত্তি নেই। আর মোবাইল ফোন অপারেটর ও সরকার টেলিযোগাযোগ খাত থেকে এখন যথেষ্ট আয় করে। তাই মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রাহকদের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।

বিটিআরসি ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) সহায়তায় প্রথম ভয়েস কলের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমা বেঁধে দেয়। কলরেট নির্ধারণে সে সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থা একটি ‘কস্ট মডেলিং’ করেছিল।

ভয়েস কল রেটের মিনিটপ্রতি

বর্তমান ও প্রস্তাবিত মূল্য

সর্বনিম্ন (অন–নেট)

বর্তমান মূল্য ২৫ পয়সা

প্রস্তাবিত ৩৫ পয়সা

সর্বনিম্ন (অফ–নেট)

বর্তমান মূল্য ৬০ পয়সা

প্রস্তাবিত ৪৫ পয়সা

সর্বোচ্চ কল রেট

বর্তমান মূল্য ২ টাকা

প্রস্তাবিত মূল্য ১.৫ টাকা

সূত্র : জনকন্ঠ

Comments are closed.

সর্বশেষ খবর

আজকের ছবি

www.facebook.com

Tag Cloud