April 27, 2025
আরবিতে রোযাকে সাওম বলা হয়।সাওম অর্থ বিরত থাকা।পরিভাষায় সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযার নিয়তে সকল প্রকার পানাহারও কামাচার থেকে বিরত থাকাকে সাওম বা রোযা বলা হয়। সকল বালেগ,মুকীম ও সুস্থ মুসলিমের উপর রমযানের পুরো মাস রোযা ফরজ।
আতœশুদ্বির শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলো রোযা। রোযা মানুষকে সংযমী হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি আদর্শ সমাজ গঠনেও তাৎপর্যপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। সামাজিক জীবনেও রোযার গুরুত্ব অপরিসিম।
ইসলাম যে সাম্যের ধর্ম,রোযার মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয়।ধনী-দরিদ্র,ছোট-বড় সবাই একসাথে তারাবিহর নামায আদায় করে,সাহরি খায়, ইফতার করে।এতে বিরাট সাম্যের ছবি ভেসে উঠে। রোযার মাধ্যমে একজন বিত্তশালী নিরন্নের ক্ষুধার যন্তনা অনুধাবণ করতে পারে।ফলে তার মাঝে গরীবদের প্রতি সহানূভ‚তি ও ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয়।রাসুল (সা.) বলেছেন “রমযান মাস সহানুভ‚তির মাস।”
রোযা সমাজের অবহেলিত দিনমজুর মানুষের প্রতি উদারতা ও সদ্ব্যবহারের শিক্ষা দেয়।রাসুল (সা.)রমযান মাসে শ্রমিকের কাজ হালকা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া এ মাসে ধনীদের যাকাত-ফিতরা ও দান সদকার মাধ্যমে দরিদ্র-অভাবগ্রস্তদের আর্থিক উন্নতি হয়।
রোযা ধৈর্যধারণের শক্তি যোগায়।মহানবী (সা.) বলেছেন, রোযা ধৈর্যের মাস।আর ধৈর্যের প্রতিদান জান্নাত।ধৈর্য সামাজিক পরিমন্ডলে এক অনন্য মূল্যবোধ সৃষ্টি করে।ফলে সমাজে শান্তিও ইনসাফের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
রোযা নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙখলাবোধ শিক্ষা দেয়। রোযার মাসে নিদ্রিষ্ট সময়ে খাওয়া,ইফতার করা ,তারাবিহর নামায আদায় করা ইত্যাদী নিয়মানুবর্তিতার প্রশিক্ষণ হয়।ফলে রোযাদার সময়ের মূল্য অনুধাবণ করে দৈনন্দিন কার্যাবলী ঠিকমত পরিচালনা করতে সক্ষম হয়।
রোযার মাধ্যমে মানুষের নৈতিকতার বিকাশ সাধিত হয়। একজন রোযাদার ব্যক্তি সবসময় আল্লাহর স্মরণে থাকে।ফলে সে কোন অন্যায় -অশ্লিল কাজের প্রতি হাত বাড়াতে ভয় পায়।
রোযাদার যাবতীয় ঝগড়া-বিবাদ থেকে নিজেকে সংযত রাখে।ফলে সমাজে অনেক দ্বন্দ-কলহ থেকে পরিত্রপরিত্রাণ পায়। রোযা রাখলে পাকস্তলি পরিস্কার হয় এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।তা সাস্তের জন্যে বিশেষ উপকারী।এতে স্বাস্তের উন্নতি ঘটে,মনোবলও সাহস বৃদ্ধি পায়।ফলে রোযাদার উৎসাহ -উদ্দিপনার সাথে সৎকাজে অংশগ্রহণ করতে পারে।
রোযার মাধ্যমে মানুষ ষড়রিপুর তাড়না থেকে মুক্তি পায়।যার ফলে রোযাদার লোভ-লালসা,কামনা-বাসনা ক্রোধ,নেশা,মিথ্যা,প্রতারণা এবং অশ্লীলতার চর্চা থেকে পূত পবিত্র হয়ে একটি সুন্দর ও আদর্শ জীবন লাভ করে।
আর আদর্শ জীবনের মাধ্যমে আদর্শ সমাজ গড়ে ওঠে। সুতরাং আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে রোযার গুরুত্ব অপরিসিম।
সূত্র : অামাদের সময় ডটকম।